নিজস্ব প্রতিনিধি, ঢাকা: রাজনৈতিক পালাবদলের পরেই দেশত্যাগী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ ৫৫ সম্পাদক ও সাংবাদিককে জাতির শত্রু হিসাবে ঘোষণা করেছিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকজনের বিরুদ্ধে দায়ের হয়েছে খুনের মামলা। পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়ে জেল খাটছেন একাধিক সম্পাদক-সাংবাদিক। আর মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) রাতে হাসিনা ঘনিষ্ঠ দেশের ২০ প্রথিতযশা সম্পাদক ও সাংবাদিকের সরকারি পরিচয়পত্র (প্রেস অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড) বাতিল করল মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। তার মধ্যে দুজন জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ও সম্পাদক ছিলেন। ইতিমধ্যেই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সিদ্ধান্ত নিয়ে সাংবাদিক মহলে জোর শোরগোল পড়ে গিয়েছে। অনেকেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন।

শেখ হাসিনা জমানার অবসানের পর থেকেই একাধিক সংবাদমাধ্যম থেকে চাকরি হারিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধপন্থী হিসাবে পরিচিত সম্পাদক ও সাংবাদিকরা। গত আড়াই মাসে প্রায় ৩০০ সাংবাদিক চাকরি হারিয়েছেন। মুক্তিযুদ্ধপন্থীদের সরিয়ে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের শীর্ষ পদ বাগিয়ে নিয়েছে রাজাকার ও জামায়াত ইসলামীর ঘনিষ্ঠ হিসাবে পরিচিত সাংবাদিকরা। খুনের মামলায় গ্রেফতার হয়েছেন ‘ভোরের কাগজ’ সম্পাদক শ্যামল দত্ত, ‘একাত্তর টিভি’-র প্রধান সম্পাদক মোজাম্মেল হক বাবু, একাত্তর টিভির হেড অব নিউজ শাকিল আহমেদ ও বিশেষ প্রতিনিধি ফারজানা রূপা। গ্রেফতারির ভয়ে আত্মগোপন করেছেন বাকি সাংবাদিকরা।

এদিন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের তথ্য অধিদফতরের (পিআইডি) প্রধান তথ্য আধিকারিক নিজামুল কবীর দেশের প্রথিতযশা ২০ সম্পাদক ও সাংবাদিককে চিঠি পাঠিয়ে তাঁদের সরকারি পরিচয় পত্র (প্রেস অ্যাক্রেডিটেশন কার্ড) বাতিলের কথা জানিয়েছেন। যাদের কার্ড বাতিল হয়েছে তার মধ্যে রয়েছেন প্রেস ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশের প্রাক্তন ডিজি জাফর ওয়াজেদ, নয়াদিল্লির বাংলাদেশ মিশনের প্রাক্তন প্রেস মিনিস্টার শাবান মাহমুদ, একাত্তর টিভির প্রধান সম্পাদক মোজাম্মেল হক, বিশেষ প্রতিনিধি ফারজানা রূপা, ওমেননিউজ২৪ ডটকমের সম্পাদক ও প্রকাশক ফরিদা ইয়াসমিন, দি ডেইলি অবজারভারের সম্পাদক ইকবাল সোবহান চৌধুরী, ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত, বাংলাদেশ প্রতিদিনের সম্পাদক নঈম নিজাম, এবিনিউজ২৪ ডটকমের প্রধান সম্পাদক সুভাষ চন্দ্র সিংহ রায়, সাংবাদিক সৈয়দ বোরহান কবীর, এটিএন নিউজের প্রধান বার্তা সম্পাদক মুন্নী সাহা, আমাদের সময় ডটকমের প্রধান সম্পাদক নাঈমুল ইসলাম খান, দৈনিক বাংলার বিশেষ প্রতিনিধি ফরাজী আজমল হোসেন, একাত্তর টিভির বার্তা প্রধান শাকিল আহমেদ, দৈনিক ঢাকা টাইমসের সম্পাদক মোহাম্মদ আরিফুর রহমান, বাসসের প্রাক্তন ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, মিথিলা ফারজানা, বৈশাখী টিভির বার্তা প্রধান অশোক চৌধুরী ও ডিবিসি নিউজের সম্পাদক প্রণব সাহা।