এই মুহূর্তে




কত রকমের ভূত আছে ? ভূত চতুর্দশীতে জেনে নিন ভূতেদের অদ্ভূতুড়ে প্রকারভেদ




পৃথ্বীজিৎ চট্টোপাধ্যায় : আজ ভূত চতুর্দশী, মানে সন্ধ্যে নামলেই “দুয়ারে ভূত” এসে যাবে। রাস্তায় রাস্তায় পাড়ার অলিতে গলিতে এনারা তেনারা বেড়িয়ে পড়বে। তবে পৃথিবীতে মানুষ আছে মানে ভূতও আছে। সে ছোট-বড়, বেঁটে-লম্বা, রোগা-মোটা সব ধরণেরই ভূতেরই অস্তিত্ব আছে এই পৃথিবীতে। এর পাশাপাশি বাংলার সাহিত্য-সিনেমা-উপকথায়ও যুগ যুগ ধরে মিশে রয়েছে ভূতের গল্প। ছোটবেলায় মা ঠাকুমার কাছ থেকে গল্প শোনা হোক, কিংবা বড় হয়ে ভৌতিক সিনেমা- এই সবেতেই ভূত যেন আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে রেখেছে মানুষকে। যেগুলো শুনে কারও গায়ে কাঁটা দেয়, আবার কেউ কেউ হেসেই উড়িয়ে দেন।

তবে এই ভূত চতুর্দশীতে তেনাদের বিষয়ে না জানলেই নয়। তাই আজ এই বিশেষ দিনে ‘তেনাদের’ ঠিকুজি-কুষ্ঠির খোঁজ দেওয়া হল। জেনে নিন তেনাদের ১৪ রকমের প্রকার –

. ব্রহ্মদৈত্য : ভূতকূলে ইনিই কুলীন। ইহজন্মে ইনারা পৈতেধারী ব্রাহ্মণ ছিলেন আর তাই অপঘাতে মৃত্যুর পর ব্রহ্মদৈত্য হয়ে গেছেন। এঁদের পরনে সাধারণত থাকে খাটো ধুতি। গায়ে থাকে পৈতে। মূলত শান্তিপ্রিয় এই বামুন দয়ালু ভূত অল্প-বিস্তর ভয় দেখানো ছাড়া খেয়ে এবং ঘুমিয়েই বেশিরভাগ সময় কাটিয়ে দেন। এছাড়া ইনারা সাত্ত্বিক আহার করেন। সাধারণত বেলগাছে কিংবা অশথ্ব গাছে এঁরা থাকতে ভালবাসেন।

. পেত্নী : গভীর রাতে শ্যাওড়া গাছের ধারে খবরদার যাবেন না। এই গাছেই নাকি পা ঝুলিয়ে বসে থাকে পেত্নী। এদের পায়ের পাতা উল্টো দিকে ঘোরানো থাকে। স্বভাবে অত্যন্ত হ্যাংলা হয় পেত্নীরা। পরিচিত মানুষের রূপ ধরে রাতবিরেতে এসে খাবার চাওয়ার অভ্যাস আছে এদের। না পেলে ভয় দেখাতে ছাড়ে না। শোনা যায়, অবিবাহিতা মহিলারা অপূর্ণ ইচ্ছা নিয়ে মারা গেলে পেত্নী হয়।

. শাঁকচুন্নি : বিবাহিতা মহিলারা অপূর্ণ ইচ্ছা নিয়ে মারা গেলে শাঁকচুন্নি হয়ে ভূতকুলে ঠাঁই পায়। এরা লাল শাড়ি, পায়ে আলতা, হাতে শাঁখা-পলা- নোয়া পড়ে থাকে। এরা জীবদ্দশায় সংসার জীবন পুরোপুরি ভোগ করতে না পারায় মৃত্যুর পরেও সেই অতৃপ্তি এদের কুরে কুরে খায়। তাই শাঁকচুন্নিরা তাদের ভূতজীবনের সধবা মহিলাদের ভয় দেখায়। সাধারণত এরা অত্যন্ত ঝগড়ুটে স্বভাবের হয়। শাঁকচুন্নির হাত থেকে বাঁচতে চাইলে বিবাহিতা মহিলারা ভুল করেও সূর্যাস্তের পর এলো চুলে ফাঁকা জায়গায় ঘুরবেন না।

. মামদো : এরা মুসলমান ভূত। সাধারণত কবরস্থানের পাশে দেখা মেলে এই ভূতের। মুলোর মতো দাঁত, কুলোর মতো কান, লম্বা দাড়ি আর ফেজ টুপি পরা মামদো নাকি ভয় দেখাতে সিদ্ধহস্ত। মামদো ভূত চেনার সহজ উপায় হল, এদের পা নেই। হাওয়ায় ভাসতে ভাসতেই কখন যে আপনার সামনে হাজির হয়ে যাবে, বুঝতেই পারবেন না! বিরিয়ানি খেতে এরা বড্ড ভালোবাসে।

. স্কন্ধকাটা : নাম শুনেই বোঝা যাচ্ছে যে, এই ভূতেদের মাথা নেই। বিশেষত ট্রেনে গলা কাটা গেলে এই ভূত হয়। সাধারণত লাইনের ধারে এরা নিজেদের মুণ্ডু খুঁজে বেড়ায়। এমনিতে এরা আত্মমগ্ন ভূত, নিজের জগতেই থাকে। ভয় টয় দেখানোয় বিশেষ মতি নেই। তবে রাতবিরেতে কেউ সামনে পড়ে গেলে সে ভয় পেয়ে আত্মারাম খাঁচা হয়ে যাবে।  

. কানাভুলো : ভুলিয়ে ভালিয়ে অচেনা জায়গায় নিয়ে গিয়ে খুন করতে এদের জুড়ি মেলা ভার। ভূতবিশ্বে খুব একটা খ্যাতনামা না হলেও কানাভুলোকে ভয় পাওয়ার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। একা মানুষ পেলেই এরা ভ্রম তৈরি করে বিভ্রান্ত করে দেয় লোকজনকে। ফলে লোকেরা একই জায়গায় বারবার ঘুরপাক খেতে থাকে। তখনই সুযোগ বুঝে টুক করে ঘাড় মটকে দেয় কানাভুলো।

. নিশি : গ্রামবাংলায় নিশির ডাকে সাড়া দিয়ে জলজ্যান্ত মানুষের উধাও হয়ে যাওয়ার ঘটনা শোনা যায়। নিশি সাধারণত পরিচিত কারো গলার স্বর নকল করে দু’বার ডাকে। তাই গভীর রাতে নাম ধরে কেউ ২ বার ডাকলেই সাবধান! অন্তত ৩ বার ডাক না শোনা পর্যন্ত সাড়া দেওয়ার কথা ভুলেও ভাববেন না।

.  গেছো ভূত : এই ভূত দেখা যায় মূলত জঙ্গলের বড় গাছে। শোনা যায়, গাছের ডাল থেকে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করলে গেছো ভূত হয়। এরা নিরিবিলি ভালবাসে। তবে নিশুতি রাতে ফাঁকা জায়গায় গাছের তলা দিয়ে হাঁটার সময় ভয় দেখালেও দেখাতে পারে। তবে সবই তেনার মর্জি!

. মেছো ভূত : এরা মাছপ্রেমী। নদী-পুকুর-জলাশয়ের ধারেপাশের গাছই এদের বাড়ি। মোটের উপর নিরীহ হলেও এই ভূত কাঁচা মাছ দেখলে মাথা ঠিক রাখতে পারে না। এমনকী লম্বা হাত বাড়িয়ে মাছ চুরি করতে এরা সিদ্ধহস্ত।

১০. বেঁশো ভূত : এই ভূত মূলত বাঁশ ঝাড়ে থাকে। শোনা যায়, কোনো ব্যক্তি বাঁশঝাড় দিয়ে যেতে গেলে এরা নিচে শোয়ানো কোনো বাঁশকে হঠাৎ উপরে তুলে সেই ব্যক্তির অতি সংবেদনশীল স্থানে আঘাত করে যন্ত্রণা দিয়ে মেরে ফেলে।

১১. আলেয়া : গ্রামেগঞ্জে ফাঁকা জমিতে বা জলাজমিতে দেখা মেলে এই ভূতের। অন্ধকারে আলোর মতো জ্বলতে থাকে এই ভূত, তা থেকেই এমন নামকরণ। এদের পিছু নিয়ে অনেকদূর অবধি আসর পর আর ফেরার পথ থাকেনা, তবে এই ভূত নাকি একা থাকতে ভালবাসে। তাই নেহাতই রাত্রিবেলা চাষের জমিতে গিয়ে না পড়লে ভয়ের তেমন কারণ নেই।

১২. একানড়ে : এই ভূত খুবই বদখত দেখতে। রোমশ দেহ, বিশালাকার দাঁত নিয়ে তালগাছের মগডালে বসে থাকে। মাঝে মাঝেই লম্বা ঠ্যাং ঝুলিয়ে ভয় দেখায়!

১৩. বোবা : এই ভূত বেশ অদ্ভুত। ঘুমের মধ্যে বুকে চেপে বসে সেই ব্যক্তির প্রাণশক্তি শুষে নেয়। জ্ঞান থাকলেও মানুষ তখন চিৎকার করতে পারেনা।  তাই গোঁ গোঁ আওয়াজ করে। শুধু মাত্র চিৎ হয়ে শুলেই বোবা ধরে।  তবে, পাশ ফিরে শুলে বা উপুড় হয়ে শুলে বোবা ছেড়ে দেয়।

১৪. জলপিশাচ : এরা জলের তলায় শুয়ে থাকে। কেউ সাঁতার কাটতে গেলেই এদের লম্বা চুল দিয়ে সেই লোকের পা জড়িয়ে ধরে ডুবিয়ে মেরে ফেলে। এদের পিছু নিলে এরা একেবারে জলের তলায় নিয়ে চলে যায়। এদের আবার পানিমুড়াও বলা হয়। 




Published by:

Ei Muhurte

Share Link:

More Releted News:

মা সেজেছেন দশ হাত-পায়ে, বসিরহাটেই এবার উজ্জয়ণের মহাকালেশ্বর মন্দির

মা কালীকে বিসর্জন দিতে গিয়ে কালীর কোলে বিলীন হয়েছিলেন রামপ্রসাদ 

৪০০ বছর আগে ডাকাতদের হাত ধরে শুরু হয়েছিল এই কালী পুজো

জানুন দক্ষিণেশ্বরে কালীপুজোর মহাভোগে কী থাকছে, রইল বিশেষ প্রণালী

ঘরে উপচে পড়বে ধন-সম্পদ, জেনে নিন দীপাবলিতে লক্ষীপুজোর সময়কাল এবং নিয়ম

সাতক্ষীরার যশোরেশ্বরী মন্দিরে মানত করেন মুসলিমরাও

Advertisement

এক ঝলকে
Advertisement




জেলা ভিত্তিক সংবাদ

দার্জিলিং

কালিম্পং

জলপাইগুড়ি

আলিপুরদুয়ার

কোচবিহার

উত্তর দিনাজপুর

দক্ষিণ দিনাজপুর

মালদা

মুর্শিদাবাদ

নদিয়া

পূর্ব বর্ধমান

বীরভূম

পশ্চিম বর্ধমান

বাঁকুড়া

পুরুলিয়া

ঝাড়গ্রাম

পশ্চিম মেদিনীপুর

হুগলি

উত্তর চব্বিশ পরগনা

দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা

হাওড়া

পূর্ব মেদিনীপুর